Tech News

Thursday, 6 September 2018

আগামী ২০-৩০ বছরে চাকরী যেতে পারে ৬০-৮০% অসৃজনশীল পেশার চাকরিজীবীদের! বিশ্বাস হচ্ছে না? এটা পড়ুন

(নিচের লিখাটি হয়ত সবার বিশ্বাস হবে না, তবে হ্যা, পোস্টটি  বেশ কয়েকটি নামকরা পত্রিকা এবং এক্সাপার্টদের কেস স্টাডির প্রেক্ষিতে করা হয়েছে, পজিটিভ মেন্টালিটি থাকলেই কেবল পোস্টটি পড়ুন, অন্যথায় স্কিপ করাই শ্রেয়!!)
kodak film case study
শুরুটা করা যাক, Kodak কোম্পানীকে দিয়ে। ১৮৮৮-১৯৬৮ সাল পর্যন্ত স্ট্রিপযুক্ত ক্যামেরা ইন্ডাস্ট্রির প্রায় ৮০-৮৫% মার্কেট শেয়ার ছিল তাদের দখলে। শুধু তাই নয় প্রায় ৮০% Gross Margin নিয়ে দাপটের সাথে চলছিল কোডাকের ব্যবসা। ১৯৯৮ সালে কোড্যাক কোম্পানিতে প্রায় ১লক্ষ ৭০ হাজার কর্মচারী কাজ করতেন এবং বিশ্বে ছবি তোলার প্রায় ৮৫% ই কোড্যাক ক্যামেরায় তোলা হত।
অল্প সময়ের মধ্যেই বিলিয়ন ডলার কোম্পানীতে পরিণত হয়েছিল এ প্রতিষ্ঠানটি।
কিন্তু যুগ খুব দ্রুত চেঞ্জ হতে থাকল। তাদের সেই ক্যামেরার পাশাপাশি কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল ক্যামেরা নিয়ে আসা শুরু করল। ডিজিটাল ক্যামেরার আগমন আসা সত্ত্বেও Kodak তাদের নিজেদেরকে চেঞ্জ করতে নারাজ ছিল। তারা দেখছিল যে পৃথিবী চেঞ্জ হচ্ছে, টেকনোলোজি চেঞ্জ হচ্ছে কিন্তু তাদের ধারণা ছিল মানুষ ফটো পেপারের উপরে প্রিন্ট করা ছবি হাত দিয়ে ধরে যে অনুভূতি পায় ডিজিটাল ফ্রেমে ক্যামেরার স্ক্রীনে দেখে সেই অনুভূতি কখনোই পাবে না।
কিন্তু না, যুগ চেঞ্জ হতে থাকলো, আস্তে আস্তে মানুষ সেই আদিম যুগের ক্যামেরা ছেড়ে ডিজিটাল ক্যামেরার প্রতি আগ্রহী হতে লাগল এবং তাদের কোম্পানীর রেভিনিউ ডাউন হতে থাকলো।
এর মধ্যেই আবার FujiFilm সস্তায় ক্যামেরা Film এবং Photo Paper নিয়ে আসল। কোডাক সে সময় ডিজিটাল ক্যামেরার দিকে মন না দিয়ে শুরু করলো ফুজিফিল্ম এর সাথে কম্পিটিশন। তারা প্রযুক্তির চেঞ্জ কে বুঝার চেস্টা না করে ফুজিফিল্মের সাথে কম্পিটিশনে ব্যস্ত ছিল। ডিজিটাল ক্যামেরা জনপ্রিয় হবে নাকি হবে না সেটা নিয়ে ঘোর কনফিউশনের মধ্যে ছিল তারা।
অবশেষে যখন পৃথিবীতে ডিজিটাল ক্যামেরা ব্যপকভাবে জনপ্রিয় হতে থাকল তখন কোডাক একটা সময় এটা বুঝতে পেরে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ডিজিটাল ক্যামেরাও বানিয়েছিল কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। অন্যান্য কোম্পানীগুলোর মার্কেট শেয়ার অনেক বড় হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। শেষ পর্যন্ত দেউলিয়া হয়ে যেতে হয়েছে কয়েকশ কোটি টাকার এই কোম্পানীকে!
এক কথায় বললে যুগের সাথে নিজেদেরকে চেঞ্জ না করা কিংবা দেরিতে চেঞ্জ করার কারনেই এত বড় কোম্পানীকে দেউলিয়া হয়ে হয়েছে।

Nokia 1100 Mobile NOKIA মোবাইলের কথা মনে আছে কার কার? কেন ধ্বংস হয়েছিল নোকিয়া?

চারদিকে Android Operating System এর এত চাহিদা থাকার পরেও তারা নিজেদের সেই পুরাতন অপারেটিং সিস্টেম নিয়েই পরে ছিল। এর উপরে Android এ না গিয়ে Windows Operating System ব্যবহার করাও ছিল আরো বড় বোকামী। সময়ের চাহিদা না বুঝে নিজেদের গোড়ামি ঠেলে দিয়েছে তাদেরকে ধ্বংসের দিকে।
এই উপরের কোম্পানিগুলোর মধ্যে কারোই কিন্তু প্রোডাক্টের কোয়ালিটি খারাপ ছিল না। ছিল না তাদের টাকার অভাব, ছিলনা দক্ষ শ্রমিকের অভাব কিন্তু তবুও এই কোম্পানি গুলো উঠে গেল কেন? কারণ এরা সময়ের সাথে নিজেকে বদলাতে পারেনি। প্রযুক্তি চেঞ্জের হাতছানি বুঝতে দেরি হয়ে গিয়েছিল তাদের আর এজন্য গুনতে হয়েছে ভুলের মাশুল।
যুগের প্রয়োজন বুঝে নিজেদেরকে চেঞ্জ করতে না পারার কারণে NOKIA কে বিক্রি করতে হয়েছিল তাদের এত বড় কোম্পানী!
ইতিহাস ঘেটে দেখলে এমন আরো কয়েক’শ কোম্পানী পাওয়া যাবে যারা নিজেদেরকে সঠিক সময়ে সময়ের সাথে চেঞ্জ করতে না পারার কারণে কোটি টাকার প্রতিষ্ঠান থেকে দেউলিয়া হয়েছে।
দেখুন, প্রযুক্তির সাথে চেঞ্জ শুধু হলেই হবে না, সঠিকভাবে এবং সঠিক সময়ে চেঞ্জ হতে হবে।
এখনকার সময়ে দাঁড়িয়ে আপনি হয়তো ভাবতেও পারছেন না যে আগামী ২০ বছরে দুনিয়া কতটা পাল্টে যেতে পারে! আমরা এখন অবস্থান করছি ডিজিটাল বিল্পব এর দুনিয়াতে যেখানে রাজত্ব করছে কম্পিউটার সাইন্স।
আজকের বিখ্যাত কোম্পানিগুলোর অবাক করা জিনিস লক্ষ্য করুন-
১) Uber কেবলমাত্র একটি software-এর নাম। না, এদের নিজস্ব কোন ট্যাক্সি নেই। তবুও আজ বিশ্বের বৃহত্তম ট্যাক্সি-ভাড়ার কোম্পানি হল এই উবার! আমাদের দেশেও চালু হয়ে গেছে এদের সার্ভিস 🙂
২) Airbnb হল আজকে দুনিয়ার সব থেকে বড় রুম বুকিং কোম্পানি। কিন্তু মজার ব্যাপার হল, পৃথিবীর একটি হোটেলও তাদের মালিকানায় নেই।
৩) Facebook পৃথিবীর সব থেকে বড় সোশ্যাল মিডিয়া, কিন্তু তারা নিজেরা সেখানে কোন কন্টেন্ট লিখে না, সেখানে পোস্ট দেই-ছবি আপলোড করি আপনি-আমি, অথচ তারা বিলিয়ন ডলার কোম্পানী!
৪) Alibaba পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ ই-কমার্স কোম্পানী, অথচ তাদের নিজেদের কোন প্রোডাক্ট নেই!
৫) একইভাবে PayTM, OLA Cab, OYO Rooms ইত্যাদি অসংখ্য কোম্পানির উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে।
৬) IBM Watson-এর নাম শুনেছেন? আজকে আমেরিকায় নতুন উকিলদের জন্য কোন কাজ নেই, কারণ IBM Watson নামে একটি আইনি software যে কোন নতুন উকিলের থেকে অনেক ভাল ওকালতি করতে পারে। এইভাবে পরের ১০-১৫ বছরে প্রায় ৭০-৮০% আমেরিকান উলিকদের আর কোন চাকরি থাকবে না। বেঁচে থাকবে খালি বাকি ২০-৩০%। তারা হবে বিশেষ বিষয়ের বিশেষজ্ঞ।
৭) নতুন ডাক্তারদেরও চাকরি যেতে বসেছে। এখনকার অনেক Software ই মানুষের থেকেও নিখুঁত ভাবে ক্যানসার এবং অন্যান্য রোগ শনাক্ত করতে পারে। ২০৩০ সালের মধ্যে AI বা Artificial Intelligence (কৃত্তিম বুদ্ধিমতার কম্পিউটার) রাজত্ব করবে পুরো দুনিয়ায়
আরো শুনবেন? ২০১৯ সালের মধ্যেই রাস্তায় নামতে চলেছে চালকহীন গাড়ি। ইতিমধ্যেই গুগল সফলভাবে কয়েক হাজার কিলোমিটার টেস্ট ড্রাইভ করে ফেলেছে।
driverless car চালকবিহীন গাড়ি হওয়ার দরুন গাড়ি চালানোর মত কাজগুলো আর পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে না। আটোমেটিক সফটওয়্যার যেহেতু গাড়ি চালাবে এ জন্য ড্রাইভারির চাকরিও বিলুপ্ত হওয়ার পথে
এবং গাড়িগুলো কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত হওয়ার হলে ৯৯% দুর্ঘটনা কমে যাবে এবং সেই কারণেই গাড়ি-বীমা করানো বন্ধ হবে এবং গাড়ি-বিমার কোম্পানি গুলোর ব্যবসা বন্ধ হল বলে..
আপনি হয়ত ভাবছেন কম্পিউটার দিয়ে গাড়ি চালালে তো দুর্ঘটনা আরো বেশি হবে। কিন্তু না, দুর্ঘটনা সাধারণত ড্রাইভারের অসতর্কতার বসে হয়, কিন্তু মানুষ অসতর্ক হতে পারে, মেশিন নয়! যেহেতু যন্ত্রের কোন ক্লান্তি নেই, অনুভূতি নেই এ জন্য সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রিত গাড়ি মানবচালিত গাড়ির থেকেও বেশি নিরাপদ হবে।
অনেকেই পার্সোনাল গাড়ি রাখলেও সময় বাচানোর জন্য অধিকাংশ সময়ই Ubar এর মত কোন software-এর থেকেই গাড়ি নিবে। আর গাড়ি চাইবার কিছুক্ষনের মধ্যেই সম্পুর্ন চালক-বিহীন একটা গাড়ি আপনার দরজার সামনে এসে দাঁড়াবে। গাড়ি গুলো ভাড়ায় চালিত হওয়ার কারণে আপনাকে ড্রপ করে দিয়ে সে বসে থাকবে না বরং চলে যাবে অন্য প্যাসেঞ্জারের কাছে। ফলে পার্কিং করার প্রয়োজন হবে না। এর মানে কার পার্কিং ব্যবসাতেও বড় হুমকি আসতে যাচ্ছে।
ভেবে দেখুন, আজ থেকে 5-10 বছর আগেও রাস্তার মোড়ে মোড়ে টেলিফোণ কল করার জন্য STD বুথ ছিল। দেশে মোবাইল বিপ্লব আসার পর, এই সবকটা STD বুথই কিন্তু তাদের ঝোলা গুটাতে বাধ্য হল। যেগুলো টিকে রইল, তারা মোবাইল রিচার্জের দোকান হয়ে গেল। তবে ধীরে ধীরে বিকাশ রকেটের মাধ্যমে মোবাইল রিচার্জ জনপ্রিয় হচ্ছে। এতে করে মোবাইল রিচার্জের ব্যবসাও বন্ধ হওয়ার পথেই হাটছে…
টাকার সংজ্ঞাও পাল্টাচ্ছে। একসময়ের নগদ টাকা আজকের যুগে “প্লাস্টিক টাকায়” পরিণত হয়েছে। ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ডের যুগ ছিল কদিন আগেও। এখন সেটাও বদলে গিয়ে হয়ে যাচ্ছে মোবাইল ওয়ালেট-এর যুগ। বাংলাদেশে বিকাশ, ইন্ডিয়াতে Paytm-এর রমরমা বাজার, মোবাইলের এক টিপে টাকা এপার-ওপার। এর পরে এখন তো Google Pay, Apple Pay, Samsung Pay এর মত সার্ভিস চালু হয়ে গেছে। পেমেন্ট করতে থাকছে না কোন ঝামেলা, NFC টেকনোলোজি ব্যবহার করে আপনার মোবাইলকে জাস্ট বারের উপরে ধরবেন, সাথে সাথে কোন ধরণের কাজ ছাড়াই আটো পেমেন্ট হয়ে যাবে আপনার প্রোডাক্ট এর প্রাইস।

Amazon Go – সেলসম্যান, ক্যাশিয়ার ছাড়াই আটোমেটিক দোকান!

Amazon Go Shop
ইতিমধ্যেই অ্যামাজন ক্যাশিয়ার বিহিন আটো শপও বসিয়ে ফেলেছে আমেরিকাতে। দোকানে ঢুকবেন যত ইচ্ছা কেনাকাটা করবেন, বের হওয়ার সময় দরজাতে বসানো সেন্সর আটোমেটিক আপনি কি কি কিনেছেন সেটা সেন্স করে আপনার ওয়ালেট থেকে চার্জ করে নিবে। না আছে সেলসম্যান, না আছে ক্যাশিয়ার।
কিছু বুঝতে পারছেন? সেলসম্যানদের চাকরিও হুমকির মুখে
মনে হচ্ছে না যে কোন রুপকথার গল্প শোনাচ্ছি? জি না ভাইজান, এইগুলো সবই বাস্তব। টেকনোলজির উন্নয়নে গোটা পৃথিবীটাই যেন রুপকথাতে পরিণত হচ্ছে।
অসৃজনশীল চাকরীগুলো চলে যাবে এবং তৈরি হবে নতুন চাকরীর ক্ষেত্র, তবে সেটার সুযোগ কেবলমাত্র তারাই নিতে পারবেন যারা আধুনিক প্রযুক্তির জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারবেন

আচ্ছা এই আটোমেশনের জন্য সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কারা?

যাদের কাজে সৃজনশীলতার কিছু নেই বা যাদেরকে বার বার একই কাজ করতে হয়, যেমন- সেলসম্যান, ক্যাশিয়ার, অ্যাকাউন্ট্যান্ট, লোন অফিসার, গাড়ির ড্রাইভার, হোটেল ম্যানেজার, ওয়েটার ইত্যাদি ইত্যাদি ধরণের জব গুলো কয়েক যুগের মধ্যেই মেশিনের দ্বারা রিপ্লেস হবে। তাই তাদের জব গুলোই সব থেকে বেশি ঝুকির মধ্যে আছে।
তবে সৃজনশীল পেশা যেমন- সার্জন, সফটওয়্যার ডেভেলপার, ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি টাইপের পেশাজীবীদের চাকরী এত সহজে রিপ্লেস হবে না, কারন সেখানে মেধার প্রয়োজন হয় যা কেবল মানুষের কাছেই রয়েছে।
তবে ভাববেন না যে পৃথিবী থেকে চাকরী ই বিলুপ্ত হয়ে যাবে, চাকরী অবশ্যই থাকবে কিন্তু চাকরী করার ধরন অনেকটাই চেঞ্জ হয়ে যাবে। যারা নিজেদের স্কীলকে ডেভেলপ করতে পারবে তারাই ভবিষ্যতের বিভিন্ন পোস্টে চাকরীর সুযোগ পাবে।
 বানিজ্যিক ভাবে রোবট বিক্রি শুরু হওয়ার ফলে রোবটের দাম অনেক কমে আসবে এবং মানুষের অসৃজনশীল চাকরীগুলো রোবট এবং সফটওয়্যার দিয়ে রিপ্লেস হতে থাকবে
যারা যুগের সাথে বদলাতে পারে না, যুগ তাদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়। তাই পৃথিবী আপনাকে জোর করে বদলানোর আগেই নিজে থেকে বদলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিন, কারন যেদিন পৃথিবী আপনাকে জোর করে বদলাবে সেদিন কিন্তু Kodak, Nokia এর মত অবস্থা হতে পারে
ইতিমধ্যেই একটা বিষয় লক্ষ করেছেন কি?
দেশে অনেকেই বলে বেড়াচ্ছে ব্যবসা নাই, টাকা নাই, সরকার ভালো না, অর্থনৈতিক মন্দা, এই রকম অনেক কিছু? কিন্তু সত্যিটা জানেন কি? যারা অনলাইনে ব্যবসা করছে তাদের জন্য এখনই হচ্ছে স্বর্ণযুগ, তাদের পকেটে মোটা অংকের টাকা ঠিকই ঢুকছে প্রতি মাসে মাসে বরং তাদের ব্যবসা আরো ভালো হচ্ছে
সরকারের দোষ দিয়ে আর কতদিন ভাই? সরকার তো দেশের উন্নয়ন করতে পারবে কিন্তু আপনার আমার পার্সোনাল ডেভেলপমেন্ট তো আপনাকে আমাকেই করতে হবে
খেয়াল করুন, যারা পুরাতনকে নিয়ে পড়ে ছিল তাদের ব্যবসা এভাবেই যেতে বসবে, ইতিমধ্যেই অত্যন্ত ক্ষুদ্র হলেওদেশের অর্থনীতির কিছুটা অংশ ফ্রীল্যান্সিং এবং অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসার দিকে ঝুকেছে। নতুনের আগমনে যদি পুরাতন প্রযুক্তিতে করে আসা কারো ব্যবসা যেতে বসে তবে এটা তো আর সরকারের দোষ নয়, আমাদের একটা জাতিগত অভ্যাস রয়েছে নিজের ব্যর্থতাকে অন্যের উপরে চাপিয়ে দেয়ার, (এখানে আবার কেউ রাজনীতির দিকে ইঙ্গিত দিয়েন না, আমি রাজনীতির কেউ নই) কিন্তু সত্যিটা হচ্ছে, ডিজিটালাইজেশনের ছোয়া আমাদের দেশেও লেগে গেছে, পুরাতনকে ধরে বসে থাকলে হতাশা ছাড়া আর কিছুই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে না
Digital Breakdown Solution

তাহলে এর সমাধান কি হতে পারে?

প্রথম কথা যদি আপনি ব্যবসায়ী হন তাহলে কি করবেন?

প্রথমেই আপনার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে অনলাইন মুখী করতে হবে। হোক না সেটা মুদির দোকান কিংবা বিউটি পার্লার, আপনার ব্যবসা যেটাই হোক না কেন সেটাকে অনলাইন মুখি করতেই হবে।
bill gates quote
বিল গেটস এর একটি যথার্থ উক্তি রয়েছে এ নিয়ে-
“যদি আপনার ব্যবসা অনলাইনে না থাকে তাহলে সেটা নিশ্চিত হারাবে”

তো ইন্টারনেট মুখী ব্যবসা করার মানে কি?

করার ধরণের দিক দিয়ে ব্যবসা দুই প্রকার হতে পারে-
এক হচ্ছে সরাসরি পণ্য বিক্রয় যেমন- মুদির দোকান, কাপড়ের দোকান
আবার হতে পারে সার্ভিস ভিত্তিক ব্যবসা যেমন- মোটরসাইকেল রিপেয়ারিং সার্ভিস সেন্টার এর ব্যবসা
তবে দুই ধরণের ব্যবসার জন্যই প্রয়োজন ওয়েবসাইট থাকা। একটি ভাল ওয়েবসাইট আপনাকে অনলাইন পরিচিতি দিবে এবং সহজে কাস্টমার নিয়ে আসবে।
যেমন ধরুন, আপনি এখন আমার ওয়েবসাইটে আছেন। আমার প্রতিষ্ঠানের নাম আইটি বাড়ি এবং আমি হচ্ছি এর ফাউন্ডার আব্দুল কাদের। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার এবং ডিজিটাল মার্কেটার। এইযে আপনি এই পোস্টটি/লিখাটি পড়তে গিয়ে আমি এবং আমার প্রতিষ্ঠানের নাম সম্পর্কে জানতে পারলেন এতে করে খুব সহজে আমি আপনার কাছে পরিচিত হতে গেলাম।
মজার বিষয় হচ্ছে আপনি যে আমার সম্পর্কে জানতে পারলেন সেটা কিন্তু এই মুহূর্তে আমি জানিও না, বাট আপনি আমাকে চিনে গেলেন। এখন ভবিষ্যতে কোন একদিন যদি আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করার বা অনলাইনে আপনার ব্যবসা প্রচার করার প্রয়োজন হয় তখন কিন্তু নিজের অজান্তেই আপনি আমার কাছেই আসবেন।
এটা কিন্তু সম্ভব হয়েছে আমার এই ওয়েবসাইটের কারণে যার মাধ্যমে আমি আপনার সাথে পরিচিত হলাম। ঠিক একই ভাবে আপনি আপনার প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিজের অজান্তেই এমন লাখো কাস্টমারের সামনে আপনার নিজের প্রতিষ্ঠানকে পরিচয় করিয়ে দিতে পারেন।
ইন্টারনেট যে ঘরে বসেই নিজের ব্যবসাকে উচু লেভেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য কতটা শক্তিশালী মাধ্যম সেটা যতক্ষন আপনি এ দুনিয়ায় প্রবেশ না করবেন ততক্ষণ বুঝবেন না।
তো ব্যবসাকে অনলাইনে মুখী করার মানে দাঁড়াচ্ছে, ওয়েবসাইট করে অনলাইনে পণ্য বিক্রয় সার্ভিস শুরু করতে হবে এবং আপনার ব্যবসা যদি পণ্য বিক্রয় না হয়ে সার্ভিস ভিত্তিক হয় তাহলে সেই সম্পর্কিত তথ্য ওয়েবসাইট দিতে হবে যাতে করে আপনার কাস্টমার আপনার সার্ভিস সম্পর্কে বিশদভাবে জেনে বুঝে আপনার দিকে আকৃষ্ট হয়ে আপনার প্রতিষ্ঠানেই ছুটে আসে।
ভাবছেন কেন করবো এত ঝামেলা? চলতেছে চলুক না. তাহলে আমার এই প্রশ্নটির উত্তর দিন-
“ধরে নিলাম আপনি একজন মুদির দোকানদার। যদি একজন ক্রেতা আপনার দোকানের চাল একই দামে ঘরে বসে অনলাইনে অর্ডার করে মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে বাসায় বসেই ডেলিভারি পেয়ে যায় তাহলে সে কোন দুঃখে কষ্ট করে আপনার দোকান থেকে গিয়ে কিনবে? “- এভাবেই ইকমার্স ছিনিয়ে নিবে লোকাল শপের ব্যবসার অনেক বড় একটি অংশ
আপনি চাইলে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলেও আমাদেরকে সাবস্ক্রাইব করে রাখতে পারেন যাতে করে এ নিয়ে নতুন কোন ভিডিও আপলোড করলেই আপনি সেটার নোটিফিকেশন পেয়ে যান। আমাদের ইউটিউব চ্যানেলের লিঙ্ক এখানে।

এবার আশা যাক চাকরীর ব্যাপারে, যারা চাকরী করেন তারা কি করবেন?

দেখুন মেশিন যতই আপনার চাকরী নিয়ে নিক না কেন, কিছু বিষয় আছে যেগুলো এত সহজে রিপ্লেস করা সম্ভব নয়। এমন চাকরীগুলো হচ্ছে সৃজনশীল চাকরী। যেমন ধরুন- সফটওয়্যার তৈরি করা, গবেষণা করা, নতুন কোন ব্যবসা আইডিয়া অর্থাৎ মানুষের বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগে এমন যে কোন চাকরী। কারন, মেশিনের সব থাকলেও চিন্তা করার ক্ষমতা কেবলমাত্র মানুষেরই থাকবে। মেশিন তার লজিকের বাইরে কিচ্ছু চিন্তা করতে বা ডিসিশন নিতে পারে না, কিন্তু মানুষ পারে। আর এজন্যই নিজেকে তৈরি করতে হবে সৃজনশীল পেশার জন্য।
কিন্তু সেটা কিভাবে?
নিজের স্কীল বৃদ্ধি করুন, সৃজনশীল কাজে নিজের মেধাকে তৈরি করুন, যেই সফটওয়্যার অদূর ভবিষ্যতে দুনিয়াতে রাজত্ব করবে সেই সফটওয়্যার কে কন্ট্রোল করার জন্য প্রস্তুতি নিন, ইন্টারনেটে নিজের ব্যবসা প্রসারের চিন্তা করুন। ভবিষ্যতে কি আপডেট আসতে যাচ্ছে সেটার খবর রাখুন। টেকনোলোজির দাস না হয়ে টেকনোলজি ব্যবহার করা শিখুন একে কন্ট্রোল করা শিখুন। তাহলেই কেবল এই প্রযুক্তির যুগে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পারবেন
আপনি নিজেকে যদি তৈরি না করেন তাহলে আরেকজন এসে আপনাকে ধাক্কা দিয়ে আপনার ব্যবসা বা আপনি যে প্রতিষ্ঠানে জব করেন সেই প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা ছিনিয়ে নিবে, যেমনটা আমরা দেখে এসেছি, ডিজিটাল ক্যামেরা আগের অ্যানালগ ক্যামেরার ব্যবসা নিয়ে গেছে, Android এসে Apple এর ব্যবসা নিয়ে গেছে, Airbnb এসে হোটেল এর ব্যবসা নিয়ে যাচ্ছে, Uber এসে লোকাল ট্যাক্সি ওয়ালাদের ব্যবসা নিয়ে যাচ্ছে
কিছুদিন আগে শোনেন নাই আমাদের লোকাল CNG ওয়ালারা Pathao এর বিরুদ্ধে ধর্মঘট করেছে? কারন কি? কারন হচ্ছে, একটা মাত্র Software এসে বাংলাদেশের গোটা CNG ব্যবসায় লালবাতি ধরিয়ে দিয়েছে।
ঠিক এই রকম আপনি যদি যুগের সাথে নিজেকে পরিবর্তন না করতে পারেন তাহলে হয়ত আপনি আজকে যে কোম্পানিতে জব করছেন সেই কোম্পানিকে নতুন কোন সফটওয়্যার এসে দেউলিয়া করে দিবে, আর আপনি চাকরি হারিয়ে হয়তবা পথে এসে যাবেন
এমনটা হচ্ছে ভাই, এটা কোন কল্পনা নয়, বাস্তবতার কথা বলছি ভাই। দেখতে দেখতে এদেশেও উন্নয়নের এবং ডিজিটালাইজেশনের ছোয়া লেগে গেছে, নিজেকে বদলান, না হলে দুনিয়া আপনাকে জোর করে বদলে দিবে।

No comments:

Post a Comment

Click Here To Join ITNiche