Tech News

Thursday, 6 September 2018

ওয়েব ডিজাইন এবং SEO, এ দুটো জানা থাকলে ইন্টারনেট থেকে হাজার উপায়ে আয় করা সম্ভব [গুজব নয়, সত্যি!]

অনলাইনে আয় বলতেই আমরা অনেকে মনে করি গ্রাফিক্স ডিজাইন, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন, অমুক তমুক আরো ব্লা ব্লা ব্লা হাবিজাবি অনেক কিছুই।
হ্যা, সত্যি সত্যি-ই সব গুলো কাজ শিখেই ইন্টারনেট থেকে আয় করা যায়।
কিন্তু আপনার জন্য কি সব?
বাস্তব জীবনে ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং, শিক্ষকতা, রাজনীতি ইত্যাদি বিভিন্ন পেশা আছে। সব গুলো পেশা থেকেই তো আয় করা যায়, কিন্তু ইনকাম করা গেলেই তো একজনের অন্য সব পেশা নয় তাইনা?
তাহলে কোনটা আপনার জন্য?
আজকের এই পোস্টে আমি আপনাকে এমন কিছু কাজের কথা বলব যেটা শিখলে আপনি অনলাইনে ক্লাইন্টের হয়ে চাকরী অর্থাৎ ফ্রীল্যান্সিং করতে পারবেন আবার চাইলে নিজেই অনলাইনে ব্যবসাও করতে পারবেন! তবে এটা কোন “রাতারাতি ধনী হওয়ার গোপন মন্ত্র”- নয়!
যদি আগামী ৫ মিনিট বাকী সব কাজ ফেলে রেখে একাগ্রতার সাথে কিছু কাজের কথা পড়তে চান তাহলেই কেবল নিচের দিকে আগান, এছাড়া নয় 🙂
তো চলুন, আপনাকে একটি প্রশ্ন দিয়ে শুরু করা যাক, বাস্তব জীবনে ব্যবসা করার জন্য মিনিমাম কিসের প্রয়োজন হয়?
উত্তরে অনেকেই বলবেন কিছু পুজি, ক্যাশ তবে সেগুলো তো লাগবেই, তার সাথে যেটা না হলেই নয় সেটা হচ্ছে কমপক্ষে একটা অফিস, বা ছোট্ট কোন দোকান বা একদম নূন্যতম একটা ঠিকানা যেখানে গেলে ওই ব্যবসার অস্তিত্ব পাওয়া যাবে। (এমনকি ফুটপাতের দোকানেরও কিন্তু একটা লোকেশন থাকে)
কেন?
কারন, ঠিকানা না থাকলে মানুষ আপনাকে খুজবে কোথায়, আপনার পণ্য বা সার্ভিস নিবে কিভাবে। এজন্যই মিনিমাম একটা ঠিকানা থাকতেই হবে ব্যবসার জন্য।

এবার যদি আমি আবারো আপনাকে জিজ্ঞেস করি, ইন্টারনেট তো ধরা যায় না, তাহলে সেখানে ব্যবসার জন্য মিনিমাম কি প্রয়োজন?

চমৎকার প্রশ্ন তাইনা?
-হ্যা ইন্টারনেটে ব্যবসা করতে গেলেও নূন্যতম কিছু একটা প্রয়োজন হয়। আর সেটা হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট! ওয়েবসাইট হচ্ছে ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যবসার প্রধান ঠিকানা।
যেমন আপনি এই মুহূর্তে আমাদের ওয়েবসাইটে আছেন এবং আমাদের একটি আর্টিকেল পড়ছেন। এখন আপনি যে ওয়েবসাইটে এই লিখাগুলো পড়ছেন, এটাই হচ্ছে অনলাইনে আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রথম পরিচিতি।
তার মানে এইটুকু ক্লিয়ার যে অনলাইনে ব্যবসা করতে গেলে ওয়েবসাইট লাগে (পয়েন্টটা মনে রাখবেন)

এবার আসা যাক, ওয়েবসাইট থাকার পরে কি লাগে?

ধরে নিলাম, আপনার ক্লাইন্ট বা আপনি অনলাইনে লেডিস হ্যান্ডব্যাগ বিক্রির ব্যবসা করবেন। তো এর জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেললেন। ওয়েবসাইট তৈরি করার মাধ্যমে অনলাইনে আপনার একটি ঠিকানা তৈরি হল। তার মানে আপনার ওয়েব অ্যাড্রেসে (যেমন ধরুন- www.your-website-address.com) গিয়ে যে কেউ আপনার ওই অনলাইন দোকান বা ওয়েবসাইট টি দেখতে পারবে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, একটি দোকান দিয়ে বসে থাকলেই কি আটোমেটিক কাস্টমার আসতে থাকবে?
মোটেও নয়, কাস্টমার নিয়ে আসার জন্য আপনার পণ্যের প্রচার বা মার্কেটিং করতে হবে। এটা তো বাচ্চা ছেলেও বোঝে 🙂
যত বেশি প্রচার তত বেশি সেল তাইনা? (সবাই জানে এটা)
কথাটা ভুল! প্রচার করার মানেই সেল বাড়া নয়। এটা অনেক বড় একটা মিথ্যা যা যুগ যুগ ধরে মানুষ বিশ্বাস করে আসছে! লাইনটা এভাবে হওয়া উচিত- সাম্ভাব্য ক্রেতার কাছে যত বেশি প্রচার, তত বেশি সেল 🙂
বিষয়টা মনে করুন, আমি একজন অবিবাহিত ছেলে, আমার কাছে যদি আপনি আপনার লেডিস হ্যান্ডব্যাগের মার্কেটিং করেন তাহলে কি সেল হবে? মোটেও নয়। এমন আমার মত হাজার মানুষের কাছেও যদি ওই লেডিস প্রোডাক্ট এর মার্কেটিং করেন তবুও কিন্তু কাজ হবে না।
কারন আমাদের তো ওই প্রোডাক্ট এর প্রতি আগ্রহ ই নেই, আমরা তো আর এর সাম্ভাব্য ক্রেতা নই।
বরং,
আপনি যদি এমন মেয়েদের কাছে ওই ব্যাগের মার্কেটিং করেন যারা হ্যান্ডব্যাগ খুজছে অথবা এমন ছেলের কাছে মার্কেটিং করেন যে তার প্রিয়তমাকে হ্যান্ডব্যাগ গিফট করতে চাচ্ছে তাহলে কিন্তু সেল হওয়ার চান্স অনেক অনেক বেশি থাকে।
কিছু কি মাথায় ঢুকেছে? আমার পয়েন্ট কিছুটা কি বুঝতে পারছেন?
শুধু মার্কেটিং নয়, বরং আপনার পণ্যের প্রতি ইন্টারেস্ট বা আগ্রহ আছে এমন লোকের কাছেই মার্কেটিং করলে দ্রুত সেল বাড়ানো সম্ভব।

এবার আসি কাজের কথায়, অনলাইনে কিভাবে সেল বাড়ানো যাবে?

ইন্টারনেটে এই ধরণের টার্গেট সেলের অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে SEO. টার্গেটকৃত ক্রেতার কাছে পণ্য পৌঁছে দেয়ার অন্যতম মূখ্য মার্কেটিং পলিসি হচ্ছে SEO। ডিজিটাল মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম বৃহৎ অংশ এটি।
SEO (Search Engine Optimization) কি? এক কথায় বলে দিলে- সার্চ ইঞ্জিন যেমন Google এর সার্চ রেজাল্টে যে কোন ওয়েবসাইটের র‍্যাংকিং করানোর প্রক্রিয়াকে SEO বলে। নতুন অবস্থায় বুঝতে অসুবিধা হলে সহজভাবে বুঝে নিন SEO হচ্ছে এক ধরণের ডিজিটাল মার্কেটিং।
web design and seo
উপরের এতগুলো কথা যদি ভালভাবে পড়ে থাকেন তাহলে এটা অন্তত বুঝে গেছেন যে, ইন্টারনেটে যে ব্যবসাই থাকুক না কেন দুইটা জিনিস লাগবেই লাগবে,
এক হচ্ছে ওয়েবসাইট বা অনলাইনে তার ব্যবসার ঠিকানা যেখান থেকে অর্ডার করা হবে আর দুই হচ্ছে SEO- যেটার মাধ্যমে সেল আসবে
যদিও এ দুটি ছাড়াও সেল বাড়ানোর আরো অনেক উপায় আছে কিন্তু এ দুটোই হচ্ছে প্রাথমিক এবং না হলেই নয় এমন জরুরী কাজ।
এখন ভাবুন তো, প্রতিটি ব্যবসাতেই যেহেতু এটির প্রয়োজন হয় আর আপনি যদি এ দুটো কাজ শিখে এ দুটো সেক্টরে নিজেকে দক্ষ করে ফেলতে পারেন তাহলে আপনার কি আর কাজের অভাব হবে?
আপনি যদি ক্লাইন্টের হয়ে কাজ করেন বা ফ্রীল্যান্সিং করেন তাহলে ক্লাইন্টের ও তো অনলাইনে একটি ব্যবসা থাকবে তাইনা। কারন তার অনলাইনে ব্যবসা আছে দেখেই তো সে লোক খুজছে ইন্টারনেটে কাজ করানোর জন্য।
তাহলে এ দুটো তার প্রয়োজন হবে আর আপনি তাকে এই সার্ভিস দিতে পারবেন। এমনভাবে প্রায় প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকেই আপনি সার্ভিস দিতে পারবেন।
অপরদিকে, যেহেতু অনলাইনে ব্যবসা করার জন্য এ দুটো হচ্ছে কোর এবং প্রধান চাহিদা এজন্য আপনি এ দুটো শিখে ফেললে নিজেও অনলাইনে একটা ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
তার মানে দাড়াচ্ছে, আপনি ওয়েব ডিজাইন এবং SEO, এ দুটো জিনিস শিখলে ইন্টারনেটে চাকরী বা ফ্রীল্যান্সিং ও করতে পারবেন এবং চাইলে নিজের ব্যবসাও করতে পারবেন

ওয়েব ডিজাইন + SEO জানা থাকলে যেসব উপায়ে আয় করতে পারবেনঃ

  • প্রথমত ফ্রীল্যান্সিং করে আয় করতে পারবেন যেমন- আপওয়ার্ক, ফ্রীল্যান্সার, ফাইভার ইত্যাদি সাইটে কাজ করতে পারবেন
  • নিজে ই-কমার্স ব্যবসা বা অনলাইনে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন
  • একটি ব্লগসাইট করে সেখানে কন্টেন্ট দিয়ে সেটার SEO করে ট্রাফিক নিয়ে আসতে পারবেন
  • সাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর আনার পরে Google Adsense থেকে আয় করতে পারবেন
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য এই নলেজ গুলোর প্রয়োজন
  • বিশেষ করে অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য এইগুলা জানা বাধ্যতামূলক
  • CPA মার্কেটিং কে যদি অ্যাডভান্স লেভেলে নিয়ে যেতে চান তাহলে এইগুলা জানতে হবে
  • লোকাল মার্কেটেও ওয়েবসাইট ডিজাইন সার্ভিস শুরু করতে পারেন
  • আশে পাশে দিন দিন ওয়েব ডিজাইনার, ডেভেলপার এবং SEO দের জবের চাহিদা অনেক বাড়ছে, অনায়াসেই এমন জবে যোগদান করতে পারেন
  • নিজেই একটি আইটি ফার্ম খুলে এই বিষয়ক সার্ভিস দেয়া শুরু করতে পারেন
  • এ রকম আরো হাজার রকমের উপায় বের করা সম্ভব যা হয়ত আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না!!…
এখন ভেবে দেখুন,
এ দুটো শিখলে আপনি চাইলে ফ্রীল্যান্সিং করে আয় করতে পারছেন, চাইলে অনলাইনে নিজের ব্যবসা শুরু করার মত টেকনিক্যাল নলেজ অর্জন করতে পারছেন বা চাইলে লোকাল কোন আইটি ফার্মে জব ও করতে পারছেন।
শুধুমাত্র আইটি ফার্ম নয়, যেহেতু আজকাল প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই ইন্টারনেটে বিক্রির সম্ভাবনা উপলব্ধি করতে পারছে কাজেই তারাও নিজেদের ওয়েবসাইট তৈরি, সেগুলো মেইনটেইন করা, এসইও করা এসবের জন্যও আলাদাভাবে এমপ্লয়ি নিয়োগ দিচ্ছে। ফলে যে কোন কোম্পানীতেই এই চাকরীর সুযোগ তৈরি হতে যাচ্ছে, যার ডিমান্ড এক সময় অনেক উপরে থাকবে।

No comments:

Post a Comment

Click Here To Join ITNiche